বিভাগ পরিচিতি

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ রাজশাহী কলেজের একটি ঐতিহ্যবাহী বিভাগ।

১৮৯৮ সালে ১ অক্টোবর অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়োগ প্রাপ্ত হন কুমুদিনী কান্ত বন্দোপাধ্যায়। তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে কলেজ চত্বরের পূর্বদিকে দক্ষিণ মুখী দ্বিতল লাল ভবনটি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জন্য নির্মিত হয়েছিলো। তখন এই ভবনটির নির্মাণ ব্যয় ছিলো ৫৭,১৪৫ টাকা। ফিজিক্স বিল্ডিংয়ে গবেষণাগারের সাথে ওয়ার্কশপও

বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

ছিলো। রাজশাহী এ্যাসিয়েশনের (১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত) উদ্যোগে এবং অধ্যক্ষ কুমুদিনী কান্ত বন্দোপাধ্যায়-এঁর প্রচেষ্টায় ৩,৫৩,৮৩৬ টাকা ব্যয়ে ১৯২২ সালে ৫টি এবং ১৯২৩ সালে ৭৮,০০০ টাকা ব্যয়ে আরো একটি হোস্টেল নির্মিত হয়েছিলো। তিনিও ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের প্রফেসর। ১৯১২-১৩ সেশনে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন বাবু বালা চরন ভট্টাচার্য্য এবং তৎকালীন অধ্যক্ষ রায় কুমুদিনীকান্ত বন্দোপাধ্যায় বাহাদুর যাঁকে রাজশাহী কলেজের স্থপতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে দেখা যায়, ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী কলেজ থেকে সর্বপ্রথম সংস্কৃত বিএ অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন (১) পরেশনাথ লাহিড়ী। এর আগে অর্থাৎ ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে রাজশাহী কলেজ থেকে কেউ অনার্সসহ বিএ পাশ করেননি। অতঃপর ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ আব্দুস সালেক দ্বিতীয় বিভাগে পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন শাস্ত্রে বিএ অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন। উল্লেখ্য ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ অবধি পদার্থবিদ্যা রসায়ন শাস্ত্র অর্থাৎ ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রি বিএ অনার্সের একটা বিষয় ছিল। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে থেকে ফিজিক্স এবং কেমিস্ট্রি বিষয়ে দুটি আলাদা বিষয়ে বিভক্ত হয়।

বিএসসি অনার্স: ১. ভোলা নাথ সাহা, তিনি রসায়ন শাস্ত্রে দ্বিতীয় বিভাগে প্রথম এবং মেধা অনুসারে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে বিএসসি অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন দুইজন ২. পদার্থবিদ্যায় অভিনাশ সাহা (দ্বিতীয় বিভাগ) ৩. রসায়ন শাস্ত্রে রাজেন্দ্রনাথ দে (দ্বিতীয় বিভাগ)

১৮৮৭ সালে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞান নিয়ে অনার্স কোর্স চালু ছিল। সৈয়দ আব্দুস সালেক কৃতিত্বের সাথে পদার্থ ও রসায়ন বিভাগে অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯১২-১৩ সেশনে পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র সংখ্যা ছিল সর্বমোট ১৩৮ জন যাঁদের মধ্যে ইন্টারমিডিয়েটে ৮৬ জন, বিএ (পাস কোর্র্স) ৪১ জন এবং বিএসসি (পাস কোর্স ও অনার্স) ১১ জন। ঐ সেশনে শিক্ষক সংখ্যা ছিলেন ১.৫ জন এবং প্রদর্শক ছিলেন ২ জন। ১৯৩০ পরবর্তী সময়ে বহুসংখ্যক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব অত্র বিভাগের শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন- যাঁদের উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকজন হলেন- সর্বজনাব এইচ সি. গাঙ্গুলী (১৯৩৪), মৌলভী আফতাবুদ্দীন আহমেদ, ড. আব্দুল্লাহ আল-মুতি সরফুদ্দিন, ড. ছদরুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, ড. মকবুলার রহমান সরকার প্রমুখ।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুল গণি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে তাঁর ১৮ বছরের স্মৃতিচারণ মূলক ‘যেমন দেখেছি রাজশাহী কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেন-

১৯৬০-৬২ সালে আই-এস-সি ক্লাশের ছাত্র হিসেবে কলেজের এই বিভাগকে প্রথম পেয়েছিলাম। তারপর ১৯৬২ সালে হারালাম। নয় বছর পর ১৯৭১ সালের জানুয়ারি মাসে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বদলি হয়ে এসে এই বিভাগকে দ্বিতীয় বার নতুন করে পেলাম। ১৯৮০ সালে পদোন্নতির জন্য আবার হারাতে হলো। ১৯৮৮ সালে বদলি হয়ে এসে তৃতীয় বার পেলাম। আবার হারালাম ১৯৯১ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে নাটোর এন এস কলেজে যোগদানের কারণে। ১৯৯৪ সালে নাটোর থেকে বদলি হয়ে এসে চতুর্থবার পদার্থবিজ্ঞান বিভাগকে পেলাম। ১৯৯৭ সালে শেষবারের মত হারিয়ে প্রফেসর ও অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করলাম জয়পুর হাট হাজী মহসিন সরকারি কলেজে। তাই শিক্ষক হিসাবে ষোল বছর এবং ছাত্র হিসাবে দুই বছর এই আঠারো বছরের আত্মীয়তা আমায় এই বিভাগের সাথে। ফিজিক্স ভবনের সম্মুখে যে ভবনটি তৈরী হয়েছে সেখানে ছিল একটি টিন শেডের লম্বা স্থাপনা। এর কক্ষ ছিলো ৪টি। একটি ওয়ার্কসপ হিসাবে ব্যবহৃত হতো। একটি লম্বা ঘর- সেখানে অনার্সের তত্ত্বীয় ক্লাস ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো। বিদায় বরণ ও বার্ষিক ভোজ অনুষ্ঠান হতো সেখানে। অন্য দুটি ছোট ছোট ঘরে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে বদলি হয়ে আসা শিক্ষকদের থাকার ব্যবস্থা হতো। বিভাগীয় প্রধান চিত্তরঞ্জন গুহ রায় অনেকদিন সেখানে ছিলেন।

১৯৬০-৬১ তে পদার্থ পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম অধ্যাপক নাসিম আহমেদ, অধ্যাপক খুরশিদ আলম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক আবদুল জাব্বার, অধ্যাপক কবির হোসেনঅধ্যাপক সামসুজ্জোহা স্যারকে। শিক্ষক হিসাবে এই বিভাগে যোগদান করে বিভাগীয় প্রধান হিসাবে পেয়েছিলাম আমার শিক্ষাগুরু ও শিক্ষক হবার প্রেরণা প্রফেসর লুৎফর রহমান স্যারকে। তখন সহকর্মী হিসাবে যাঁদের পেলাম তাঁরাস হলেন- সর্বজনাব বেলায়েত আলী, আবদুল হানিফ, আবু তালেব হোসেন, মফিজুদ্দিনহাসান আলি। হাসান আলি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার সহপাঠী ছিরো। পরবর্তীতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যে সহকর্মীদের পেয়েছিলাম তাঁরা হলেন অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন গুহ রায়, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক কলিমুদ্দিন, অধ্যাপক যোবদুল হক, অধ্যাপক ফজলুর রহমান, অধ্যাপক আজাদুর রহমান, শিরিন সুফিয়া, রবিউল হক, সাইদুর রহমান, কবিরুল ইসলাম, হেরাজ আলি প্রামনিক, মজিবুর রহমান, আলি আহসান, গোলাম হোসেন প্রামানিক প্রমুখ।

তখন বিভাগে ৬ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিল। আবুল বেলায়েত, সাধুমনি, জালাল, ভুলু ও গোলাম। বিভাগকে তারা নিজের ঘরবাড়ী মনে করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতো। সাধুমনি ও আবুলের সাথেতো যন্ত্রপাতি কথা বলতো। আমরা প্রতিটি ক্লাসে (বিশেষ করে এইচএসসি) প্রতিটি টপিকের উপর যন্ত্রপাতি দিয়ে ডেমোনেস্ট্রেশন দিতাম। আবুলকে আগেই বলা থাকতো। সে আগে থেকেই সবকিছু রেডি করে গ্যালারীর টেবিলে সাজিয়ে দিতো।

বিভাগে চা খাওয়ার জন্য কিছু অনুদান দেয়া হতো। অবশ্য শিক্ষকরা মাসিক পাঁচ টাকা হারে চাঁদা দিতেন। ডেমেনেস্ট্রেটর ছিলেন শহিমুদ্দিন সাহেব ও বাশীর সাহেব। পরে ইয়াসিন আলি দেওয়ান যোগদান করেছিলেন। অত্যন্ত একজন ভাল মানুষ বাশির সাহেব প্রতিদিন দোতলায় আমরা জামাত করে জোহরের নামাজ আদায় করতাম। বাশির সাহেব ইমামতি করতেন।

১৯৮০ সালের পূর্বে বাড়িভাড়া ভাতা ছিল না। তখন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যে কোন ব্যবহারিক ক্লাসে একজন শিক্ষক ও একজন ডেমোনেস্ট্রেটর থাকতেন।

বিভাগে প্রতি বছরই পিকনিক হতো। শিক্ষকবৃন্দ প্রিন্সিপালসহ সপরিবারে অংশ গ্রহণ করতেন। বেশ কিছু প্রতিভাবান ছাত্র/ছাত্রী পদার্থবিজ্ঞান অনার্স কোর্সে ভর্তি হয়েছিল। এই মুহুর্তে সবার নাম মনে পড়ছেনা। মোশাররফ, অচিন্ত, সঞ্জিব আলোক চক্রবর্তী এরা সবাই কর্মজীবনে প্রফেসর ও অধ্যক্ষ হয়ে অবসরে গেছেন। অত্যন্ত প্রতিভাবান ওয়াহেদ উদ্দীন, সুযোগ থাকতেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে রাজশাহী কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি হয়েছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিল এবং বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়েছিল। এনামুল হক সেক্রেটারী, সিরাজুল ইসলাম জয়েন্ট সেক্রেটারী হওয়ার পর ফরেন এ্যাম্বিসিতে যোগদান করেছিলো। আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় স্যার প্রফেসর এমিরেটাস অরুণ কুমার বসাক, নিউ ডিগ্রী কলেজের সাবেক যাদরেল প্রিন্সিপাল প্রফেসর যোবদুল হক ও এই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অনার্সের ছাত্র।

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে একটা বড় আকারের টেলিস্কোপ ছিল। হয়ত এখনও আছে কিন্তু কেমন আছে জানিনা। আমরা মাঝে মাঝে পদ্মা নদীর দিকে ফোকাস করে চরের বাড়ি ঘর দেখতাম। লেন্সগুলোতে ফাংগাস পড়ে গিয়েছিল না হলে ভারতের বর্ডার পর্যন্ত দেখা যেত। একদিন অচিন্ত্য কুমার দত্ত, সঞ্জয় ভট্টাচার্য্য ও আলোক চক্রবর্তীর আগ্রহে ছাদের উপর টেলিস্পোপটি দিয়ে পূর্ণ চন্দ্র গ্রহণ দেখেছিলাম। শুনেছি এটা নিয়ে নাকি আগে আকাশ গবেষণা হতো।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের কোনো শিক্ষক সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেননি। শুধু হানিফ সাহেব ভারতে চলে গিয়ে ছিলেন এবং স্বাধীনতার পর এসে বিভাগে যোগদান করেছিলেন। আমরা দেশের মধ্যেই এদিক সেদিক ছুটাাছুটি করেছি শুধু প্রাণ বাঁচানোর জন্য। বিভাগীয় প্রধান লুৎফর রহমান স্যারকে পাক সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে গিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ শামসুজ্জোহা হলে আটক করে রেখেছিল। অবশ্য কিছুদিন পর ছেড়ে দিয়েছিল।

এখনও প্রতিমাসে অন্তত: একবার দেখতে যাই আমার এই হারানো ধনকে। কিন্তু করোনা কালে ( কোভিড-১৯) সম্ভব হচ্ছেনা। বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান-এঁর প্রশংসা করার মত ভাষা আমার জানা নেই, তবে তিনি রাজশাহী কলেজের হৃত ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করে কলেজের সৌন্দর্য বর্ধন করেছেন তা স্বরণীয় হয়ে থাকবে।

অধ্যাপক মো: মোজাম্মেল হক ২০০১ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে রাজশাহী কলেজে কর্মরত ছিলেন। তাঁর লেখা ’ স্মৃতি বিজড়িত রাজশাহী কলেজ’ লেখনিতে লিপিবদ্ধ করেন- ঐতিহ্যবাহী উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী কলেজে ১৯৬৪-১৯৬৬ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগের আমি ছাত্র ছিলাম। ১৯৪৮ সালে ৩১ মে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা গ্রামে আমার জন্ম। ১৯৬৪ সালে তালগাছি আবু ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয় হতে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হবার সুযোগ পাই। উচ্চ শিক্ষা ও উন্নততর শিক্ষা গ্রহণের জন্য এই কলেজে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল যথার্থ। আমার অধ্যায়নকালীন অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ জনাব মো আব্দুল হাই। শিক্ষার পরিবেশ এবং বিদ্যাপীঠের অবস্থান ছিল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষক এবং তাদের বিভিন্ন রকম গুণাবলীর বৈশিষ্ঠ্যপূর্ণ আচরণ আমার মনে গভীর রেখাপত করত। ক্লাসে শিক্ষকগণ যে ভাবে পাঠদান করতেন তারপর বাড়িতে ফিরে সেই পাঠগুলো পুনরায় পড়ার খুব একটা প্রয়োজন হতোনা। এটা সম্ভব হতো শিক্ষকদের আন্তরিকতা, পাঠদান পদ্ধতি ও শিক্ষার্থীদের অসীম আগ্রহের ফলে। ১৯৬৪ সালের শেষের দিকে কলেজে একটি মর্মান্তিক ও রোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞান বিভাগে তখন দুটি সেকশন ছিল। প্রতিটি সেকশনে ১২৫ জন করে শিক্ষার্থী ছিল। আমাদের ‘ই’ সেকশনের ছাত্র শহীদুল এবং অপরজন, রাজশাহী মমতাজ হোটেলের মালিকের ছেলে, পদ্মার পাড়ে পাখি শিকারে যায়। তারা আর ফিরে আসে নি। ১৯৬৫ সালের শেষের দিকের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, ঐ সময় সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের আধিপত্যের কারণে কোন ছাত্র সংসদ ছিল না। আমরা সাধারণ ছাত্র, সিকান্দার আবু জাফরের নেতৃত্বে দলবদ্ধ হয়ে ঐ ছাত্র সংগঠনের ছাত্রদের কলেজ থেকে বিতাড়িত করি। ফলে কলেজে ছাত্র সংসদ এর যাত্রা শুরু হয় এবং ঐ সংগঠনের ছাত্রদের দৌরাত্মের অবসান হয়। ১৯৬৫ সালে পাকভারত যুদ্ধ সংঘটিত হয়। অনেকে রাজশাহী ছেড়ে যায়। আমরা কিছুসংখ্যক ছেলে দেশপ্রেমিক শিক্ষকদের নেতৃত্বে ফায়ার ফাইটিং ট্রেনিং গ্রহণ করি এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত ছিলাম।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. গোলাম হোসেন প্রামানিক ১৯৯২ হতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কর্তরত ছিলেন। তাঁর দীর্ঘ স্মৃতিচারণ মূলক প্রবন্ধে (রাজশাহী কলেজ ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্মৃতি) লিখেছেন-

ঐতিহ্যবাহী শতাব্দীর প্রাচীন বৃটিশ শাসিত অবিভক্ত ভারত আমলে ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কলেজ। অনেক স্মৃতি, সমৃদ্ধ প্রশাসনিক কাঠামো, উন্নত ও গুণগত শিক্ষারমান, প্রাচীন গ্রন্থাগার, ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসে বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন ভবন এবং অতীতে যাঁরা ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারী ছিলেন তাঁদের স্মৃতিতে উদ্ভাসিত একটি গর্বিত অনন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

আমি ১৯৯২ সালে ১৬ জানুয়ারি কাঙ্খিত স্বপ্নের এই কলেজে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করি। সে সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে বিভাগীয় প্রধান ছিলেন প্রফেসর আবু তালেব হোসেন। শিক্ষকের মোট পদ সংখ্যা ৭টি ও ২ জন প্রদর্শক শিক্ষক এবং ৩ জন অফিস সহায়ক কর্মচারী।

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুই সেশনে ৩০০ জন করে মোট ৬০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। বিএসসি পাস কোর্স ২ বছর, অনার্স কোর্স ৩ বছর মেয়াদি এবং আসন সংখ্যা ছিল ২০। অনার্স শিক্ষার্থীদের ২ বছর সাবসিডিয়ারি পড়তে হতো। ডিগ্রী পাস ও অনার্স কোর্স রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। মাস্টার্স পূর্ব ভাগ ও মাস্টার্স শেষ বর্ষের কোন কোর্স ছিল না। ১৯৯৫ সালে ডিগ্রী পাস, অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিভুক্ত হয়।

একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার মেধার ভিত্তিতে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করা হতো। তবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য রাজশাহী সিটির ভিতর হতে এসএসসি পাস করা ছাত্র/ছাত্রীদের সিটির বাহিরের ছাত্র/ছাত্রী অপেক্ষা মোট ৫০ নম্বর কমে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারতো। বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগ, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনা অঞ্চলের অধিকাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের স্বপ্নের রাজশাহী কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করতো। উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সাল হতে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ২০১০ সালে পুনরায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করা হয়।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নিচ তলা দুটি গ্যালারী ক্লাস রুম ছিল। মাঝের কক্ষটি প্রিপারেশন রুম। ঐ কক্ষে বড় বড় আলমীরাতে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির এবং বিএসসি পাস কোর্সের তত্ত্বীয় সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত যন্ত্রপাতি, নমুনা, মডেল এবং পাঠ দানের জন্য সংশ্লিষ্ট সামগ্রী সাজানো থাকতো। শিক্ষক ক্লাসে যাবার সময় তাঁর ক্লাস উপস্থাপনার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের যন্ত্রপাতি/ মডেল নিয়ে ক্লাসে যেতেন এবং সেগুলো শিক্ষার্থীদের প্রদর্শন এবং ব্যবহার বিধি বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে ক্লাস পরিচালনা করতেন। ফলে রাজশাহী কলেজের মতো এরকম বাস্তব ভিত্তিক তত্ত্বীয় ক্লাস বাংলাদেশের আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখানো হতো কি না তা আমার জানা নেই। গ্যালারীতে বড় একটি টেবিল ছিল। সেখানে যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করা হতো। শিক্ষকদের বসার কোনো চেয়ার ছিল না। শিক্ষার্থীরা যন্ত্রপাতি স¦চক্ষে দেখে বাস্তবমুখী তত্ত্বীয়/ ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করতো। উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড তথা সমগ্র বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। বর্তমানে এই ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

প্রথম বর্ষ অনার্স শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা বিভাগে নেয়া হতো। মেধার ভিত্তিতে বিভাগের আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করা হতো। তবে পদার্থবিজ্ঞানে ভর্তির জন্য গণিত বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হতো। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন থেকে ভর্তির জন্য অনুরোধ করা হলেও বিভাগীয় প্রধানসহ সকল শিক্ষক এ বিভাগে কঠোর পরিশ্রম ও লেখাপড়া না করলে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক বিষয়ে পাস করা সম্ভব নয় বিধায় মেধাক্রম ছাড়া এই বিভাগে ভর্তি করা যাবে না বলে বুঝাতেন। মেধারক্রম ছাড়া ভর্তি করা হতো না। ফলে বিভাগে পড়াশুনার গুণগত মান, শৃঙ্খলা ও শিক্ষার শুষ্ঠু পরিবেশ সর্বদা অক্ষুন্ন থাকতো এবং আছে।

রাজশাহী কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করলে মাস্টার্স পূর্বভাগ এবং অনার্স পাস করলে মাস্টার্স শেষ পর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতো। অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়েও মাইগ্রেশন নিয়ে ভর্তি হওয়া যেত।

সেমিনার ফি ও ল্যাব উন্নয়ন ফি না থাকায় সরকারি বরাদ্দ ছাড়া যন্ত্রপাতি ক্রয় ও সেমিনারের বই ক্রয় সম্ভব ছিল না। কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হওয়ার পর মাস্টার্স পূর্ব ভাগ ও মাস্টার্স শেষ পর্ব চালু হয়। তখন থেকে সেমিনার ফি ও ল্যাব উন্নয়ন ফি বিভাগে আদায়ের নিয়ম চালু হয়।

অনার্স শিক্ষার্থীদের বাস্তব ভিত্তিক জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রতি বছর শিক্ষা সফর ও বিদায়-বরণ অনুষ্ঠান করা হতো। দেশের বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প যেমন-কাপ্তই হাউড্রো ইলেকট্রিক প্রজেক্ট, সার কারখানা, চট্টগ্রাম স্টিল মিল, সিমেন্ট ও ইস্টার্ন রিফাইনারী ইত্যাদি বিভিন্ন ভারি শিল্প কারখানা দেখানো হতো।

পদার্থবিজ্ঞান ভবনের দক্ষিণ পূর্ব কোণে পশ্চিমমুখী ১টি বড় টিন সেড ওয়ার্কশপ ছিল। সেখানে লেদ মেশিনের সাহায্যে নাট, বোল্ট, যন্ত্রপাতি তৈরি ও পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহারিক ক্লাসে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি মেরামত করা হতো। বর্তমানে সেখানে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবন অবস্থিত। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে ওয়াকর্শপে কাজ করতে হতো।

রাজশাহী কলেজ কলা ভবন, অডিটোরিয়াম ও অন্যান্য ক্লাস রুমে হাই বেঞ্চ ও লো বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ও অন্যান্য ব্যবহৃত সামগ্রী পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ভাবে হ্রাস বা হারিয়ে যেতে থাকে, যা প্রতিরোধ কল্পে কলা ভবনের নিচ তলার সব কক্ষে হাই বেঞ্চ ও লো- বেঞ্চ লোহার এ্যাঙ্গেল দ্বারা মেঝেতে স্থাপন করা হয়।

১৯৯৫ সালে তৎকালীন সরকার ছাত্র/ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য কলেজকে একটি বাস প্রদান করেন। বাসের মাঝে পার্টিশন দিয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক করে শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ভর্ত্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।

অধ্যাপক মো. গোলাম হোসেন প্রামানিক বলেন, রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে এবিএফ, সিডিই ও নিঊ ব্লক তিনটি শাখায় বিভক্ত ছিল। প্রতিটি শাখায় একজন তত্ত্বাবধায়ক ও একজন সহকারী তত্ত্বাবধায়ক দায়িত্ব পালন করতেন। ২০০১ সালে এ বিন্যাস পরিবর্তন করে তিনটি শাখার জন্য আমাকে প্রধান তত্ত্বাবধায়ক এবং প্রতিটি ব্লকে একজন করে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেয়া হয়। ছাত্রাবাসের প্রতিটি ভবনে একজন মনিটর/ ছাত্র প্রতিনিধি (মাস্টার্স শেষ বর্ষের) প্রতি বছর ছাত্রদের ভোটে নির্বাচিত হতো। কিন্তু এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে না হওয়ায় ও অনিয়মের কারণে মনিটর সিস্টেম বাতিল হয়ে যায়। সাতটি ভবনে সাতটি কক্ষে আরো অতিরিক্ত ২১টি সিট বাড়ানো হয়। ছাত্রবাসের ক্যাম্পাসে সুপারদের জন্য (প্রায় পরিত্যাক্ত) তিনটি বাসভবন ছিল। সেগুলোতে আরো ৪১টি সিট ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। ছাত্রাবাসে কোন অতিথি রুম না থাকায় ছাত্রদের অভিভাবক/মহিলা অতিথিদের জন্য ছাত্রদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করা অসুবিধা বিবেচনা করে ছাত্রাবাসের প্রধান ফটকে একটি অতিথি কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্রাবাস ক্যাম্পাসের শোভা বর্ধনকল্পে প্রায় ৩০০ মেহগুনি ও উইপিং দেবদারু বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছিল।

তথ্য প্রযুক্তির অবিশ্বরণীয় উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে সিলেবাসের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। যেমন পূর্বের সিলেবাসে ব্যবহারিক বিষয়ে ভাকুয়্যাম টিউব, ডায়োড, ট্রায়োড, ট্রেট্রোট, পেন্ট্রোড ও এনালগ যন্ত্রপাতি ব্যবহার হতো। তার পরিবর্তে এখন সেমিকন্ডাটোর, আইসি, ডিজিটাল সিস্টেম, আধুনিক যন্ত্রপাতি, আধুনিক প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ইত্যাদি ব্যবহার করা হচ্ছে।

১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ দোতলায় একটি কক্ষে (বর্তমান কক্ষ নং ২০৩) গোল টেবিলের চারদিকে বসতেন। টেবিলে প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য একটি করে ড্রয়ার ছিলো। শিক্ষবৃন্দের বর্তমান বসার কক্ষটি শ্রেণি কক্ষে যাওয়ার পূর্বে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য ব্যবহৃত হতো। কিন্তু ১৯৯৬ -২০০৭ সাল পর্যন্ত বর্তমান কক্ষেও শিক্ষকমন্ডলী গোলটেবিলের চারদিকে বসতেন।

সেমিনারের বই বিতরণ ও অন্যান্য বিভাগীয় আথিক দায়িত্ব পালন করতেন একজন শিক্ষক। বই রাখার জন্যে নির্ধারিত সেমিনার ছিলনা। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্তে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের অনার্র্স চতুর্থ বর্র্ষ ও মাস্টার্স শ্রেণির ল্যাবরেটরীর পাশে ১৯৯৮ সালে একটি কক্ষকে সেমিনার কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা আরম্ভ হয়। ২০১৬ সালে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মূল ভবনের ছোট গ্যালারিটি ভেঙ্গে বর্তমান সেমিনার কক্ষটি তৈরি করা হয়। মাস্টার্স ল্যাবরেটরীর দক্ষিণ পাশে বহিঃপরীক্ষকের জন্য একটি অতিথি কক্ষ (বর্তমান কক্ষ নং ১০৫) ছিলো। মূল ভবনের দোতলায় পরে ২০১৫ সালের দিকে ২০৩ কক্ষটি অতিথি কক্ষ ব্যবহৃত হতে থাকে। ঐ কক্ষটি ২০১৬ সালে ৪র্থ বর্ষ অনার্স শ্রেণির শিক্থার্থীদের ক্লশরুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

১৯১৫ সালে নির্মিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মূল লাল ভবনের ছাদ দিয়ে কক্ষে ও বারান্দায় পানি পড়তে শুরু করে আনুমানকি ১৯৯০ সালের দিকে। এই ছাদটিকে বেশ কয়েকবার পুরু আরসি ঢালাই দেয়া হয়। ২০১৯ সালে সর্বশেষ ঢালাই দেয়া হয়। অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা: হবিববু রহমান-এঁর সময় ২ বার ঢালাই দেয়া হয়। মূল ভবনের গেটের ডানদিকে একটি মাত্র ওয়াশরুম ছিলো। এখন বিভাগে পুরুষ শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য ১টি, মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক ১টি এবং শিক্ষকবৃন্দের জন্য প্রথক আর একটি ওয়াশরুম আছে।

২০১৩ সাল থেকে প্রথমে উচ্চ মাধ্যমিক ও পরে অনার্স ও মাস্টার্স শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষেত্রে শ্রেণি কক্ষে মালিন্টমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার শুরু হয়। মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্টে পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করে প্রজেক্টেরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন এবং মার্কার ও হোয়াইট বোর্ড ব্যবহার করে পাঠদান কার্যক্রম চলতে থাকে।

বর্তমান অধ্যক্ষ স্যারের কার্যকালে ২০১৬ সালে মূল ভবনের নিচ তলার মেঝে টাইলস করা হয় এবং শিক্ষক সাধারণ কক্ষ ও সেমিনার কক্ষে শীতাতপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পূণারয় এই লাল ভবনটির বিভিন্ন কক্ষ ঘিয়ে এং বহিরাবরণ লাল রং করা হয় ২০১৯ সালে। ২০১৯ সালে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ঐতিহাসিক গ্যালারীর (১০৪ নং কক্ষ) বেঞ্চের টপকে (উপরের কাঠের অংশকে) কাঠ জোড়া দিয়ে প্রশস্থ করেন বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা: হবিববু রহমান। বারান্দায় স্যার আইজাক নিউটন এবং আলবার্ট আইনস্টাইনের দুটি বড় চিত্র কাচের ফ্রেমে বাধাই করে টানানো হয় ২০১৯ সালে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম চীনে করোনা ভাইরাস জনিত বৈশ্বিক মহামারী ( কোভিড-১৯) শুরু হয় এবং তার ধাক্কা বাংলাদেশে লাগে ২০২০ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় সাড়ে এগারো লক্ষ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। আর আক্রান্ত হয় প্রায় ৪ কোটি ৩০ লক্ষ। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৫৭৮০ জন আর আক্রান্ত প্রায় ৪ লক্ষ। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেল। শিক্ষার্থীরা মেস ছেড়ে দিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। এপ্রিল মাস থেকে অন-লাইন ক্লাশ চলতে থাকলো। অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. হবিবুর রহমান কলেজের কেন্দ্রিয় লাইব্রেরীতে ডিজিটাল স্টুডিও তৈরি করে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির অনলাইন লাইভ ক্লাস রেকর্ড করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এই স্টুডিও হতে অন-লাইন লাইভ ক্লাশ রেকর্ড করা হতো। শহরের নেট স্পিড চলার মতো থাকলেও গ্রামাঞ্চলে নেটের দূর্বল ব্যান্ডউডথের কারণে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাশে সংযুক্ত হতে অসুবিধায় পড়তে হতো। বর্তমানে ২০২০ সালের নভেম্বর মাস। এখনো করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব না হলে শিক্ষার্থীদের জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট), জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি’র রেজাল্ট প্রদানের সরকারি সিদ্ধান্ত হয়।

বিভাগীয় প্রধান

Md. Alauddin

প্রফেসর মোঃ আলাউদ্দিন

একাডেমিক লিংক

এক নজরে

ডিগ্রি কোর্সে পাঠদান আরম্ভ ১৮৭৮
অনার্স কোর্সে পাঠদান আরম্ভ ১৮৮৭
মাস্টার্স কোর্সে পাঠদান আরম্ভ ১৮৯৩
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাঠদান আরম্ভ ১৯০৯
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মাস্টার্স কোর্সে পাঠদান আরম্ভ ১৯৯৩
শিক্ষকের সংখ্যা ১৩
শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১,৬০০ (প্রায়)

প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধানগণ

নাম সময়কাল
আব্দুল হক ১৯৫৪-১৯৫৫
মোঃ মজিবুর রহমান ১১/১১/০৪-০৪/০৪/০৯
মহাঃ হবিবুর রহমান ০৪/০৪/০৯-৩০/০৪/০৯
ড. মোঃ হাফিজুর রহমান ৩০/০৪/০৯-২৪/০৩/১০
রওশন আরা বেগম ০৭/০৫/১১-৩০/১১/১৩
মোঃ একরামুল হক ৩০/১১/১৩-২৩/০৩/১৪
আবু নোমান মোঃ আমির আলী ২৩/০৩/১৪-?
মোঃ আব্দুল জলিল ১০/০৯/১৬-২৯/১২/১৬
মোঃ আলী আহমেদ খান ১৬/০৯/১৭-২১/০৪/১৮
ডাঃ মোঃ নাজিম উদ্দিন ২১/০৪/১৮-?
০৯/১০/২০২৪-চলামন

ফটো গ্যালারি

বাজেট ফরম্যাট ডাউনলোড
আমাদের সাথে যোগাযোগ

যোগাযোগের তথ্যঃ

ফোন নম্বরঃ +৮৮ ০২৫৮৮৮৫৫২২৫
ই-মেইলঃ rc1873physics@gmail.com

Official Facebook page for this department

নোটিশ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

২০২১ সালের প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স পরীক্ষা সংক্রান্ত সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি।


২০২৩ সালের অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি


২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি


২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স (নিয়মিত) কোর্সে ভর্তি কার্যক্রমে অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন ফরম পূরণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির আবেদনঃ ১৭/০৫/২৪ থেকে ২৯/০৫/২৪ পর্যন্ত।


২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স (নিয়মিত) প্রোগ্রামের ভর্তি কার্যক্রমে অনলাইন রিলিজ স্লিপ আবেদন সম্পর্কিত জরুরী বিজ্ঞপ্তি


উচ্চ মাধ্যমিক অভ্যন্তরীন পরীক্ষার ফলাফল দেখতে এখানে ক্লিক করুন

বিভাগীয় শিক্ষক তালিকা

ক্রমিক শিক্ষকের নাম পদবী ব্যাচ মেধা যোগদানের তারিখ
০১. মোঃ আলাউদ্দিন (৮৮২২) অধ্যাপক ১৮ ১৫ ০৯/১০/২০২৪
০২. মোঃ মাহাফুজ হাসান (৯০৫৯) সহযোগী অধ্যাপক ১৮ ৩৭ ০১/১১/২০১৬
০৩. সহযোগী অধ্যাপক
০৪. সহকারি অধ্যাপক
০৫. প্রদীপ কুমার মোহন্ত (১৩৯১৭) সহকারি অধ্যাপক ?
০৬. মোঃ আতিকুজ্জামান (১৪১৭৯) সহকারি অধ্যাপক ২৪ ৯২ ০১/১০/২০২২
০৭. মোস্তফা নাসিরুল আজম (১৪৫২৫) সহকারি অধ্যাপক ২৪ ১৩৫ ১৬/১১/২০১৬
০৮. মোঃ আব্দুল মমিন (১৫৮৮৪) সহকারি অধ্যাপক ২৬ ২২ ১৬/১১/২০১৬
০৯. মোঃ বারিক মৃধা (২৩০৩১) সহকারি অধ্যাপক ৩০ ১৭ ০২/০৪/২০২২
১০. জেসমিন ফেরদৌস (২৫৯০৫) প্রভাষক ২৪/০৫/২০১৬
১১. মোসাঃ জান্নাতি আক্তার (২৫৯২৫) প্রভাষক ?
১২. দীপক সরকার (১৭১৩৫১২৮০৩১) প্রভাষক ৩৫ ৩১ ২৩/০৭/২০২২
১৩. মোঃ আতিক আলী (২১১৩৮১২৮০১৯) প্রভাষক ৩৮ ৩৩ ০৮/১০/২০২৪
১৪. প্রদর্শন শিক্ষক
১৫. প্রদর্শন শিক্ষক

মোঃ আলাউদ্দিন

অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

মোঃ মাহাফুজ হাসান

সহযোগী অধ্যাপক

প্রদীপ কুমার মোহন্ত

সহকারি অধ্যাপক

মোঃ আতিকুজ্জামান

সহকারি অধ্যাপক

মোস্তফা নাসিরুল আজম

সহকারি অধ্যাপক

মোঃ আব্দুল মমিন

সহকারি অধ্যাপক

মোঃ বারিক মৃধা

সহকারি অধ্যাপক

জেসমিন ফেরদৌস

প্রভাষক

মোসাঃ জান্নাতি আক্তার

প্রভাষক

দীপক সরকার

প্রভাষক

মোঃ আতিক আলী

প্রভাষক

Department of Physics